নারায়ণগঞ্জে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মেছেরের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ

ফতুল্লার কুতুবপুরে ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি শহীদ শফিকুর রহমান মেছেরের ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে৷ বুধবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে নূরবাগের সিকদার ভিলায় আয়োজিত স্মরণসভা ও মিলাদ মাহফিলে বক্তারা মেছেরের রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিচারণা করেন৷

মেছেরের বড়ভাই ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সহসভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব শিকদার মো. গোলাম রসুল বলেন, মেছের বঙ্গবন্ধু ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশ্নে আপোষহীন ছিলেন৷ কুতুবপুরে আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে সে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে৷ ৮৬’ সালের নির্বাচনে প্রচারকালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শ্রদ্ধেয় আনসার আলি ভাইয়ের উপর বিএনপির ক্যাডারেরা হামলা করে। মেছের তাদেরকে প্রতিহত করে সভার ব্যবস্থা করে। ৯৬’ সালের নির্বাচনেও ফতুল্লা, কুতুবপুরে মেছের দিনরাত শ্রম দিয়েছে৷ সন্ত্রাসীদের হামলায় মেছেরের হাতের দুইটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পরে জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে ইউরোপে স্যাটেল্ড করে দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু মেছের কুতুবপুরের মানুষকে প্রচণ্ড ভালোবাসতো বিধায় দেশ ছাড়তে রাজি হয়নি। মেছের আজ নেই, কিন্তু আমাদের সন্তানেরা সুশিক্ষিত হয়েছে, এটি আমাদের জন্য গৌরবের৷ মেছেরও বেঁচে থাকাবস্থায় বলতো, আমাদের সন্তানেরা মেধাভিত্তিক সমাজের জন্য কাজ করবে। ওর সেই স্বপ্নই বাস্তবায়িত হয়েছে৷’

কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী জসিম উদ্দিন বলেন, মেছের সবসময়ই বড় ভাইয়ের মতো শ্রদ্ধা করতো আমাকে৷ দলের জন্য ওর ত্যাগ সীমাহীন৷ কুতুবপুরে আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠিত করতে মেছের যা করেছে, তার ঋণ কোনোদিনই শোধ করা যাবে না।’

কুতুবপুর ইউনিয়ন বৃহত্তর ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘কুতুবপুরে মেছেরের যে কতোটা দরকার ছিল, তা আজ আমরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। মেছের যখন রাজনীতি করেছে, আমি তখন ঢাকাতে ব্যবসা করতাম৷ আমি দেখেছি, আওয়ামী লীগের জন্য সে কতোটা লড়াই- সংগ্রাম করেছে৷ মেছের বেঁচে থাকলে কুতুবপুরে আওয়ামী লীগের এত দুর্দশা হতো না। আজ মেছের বেঁচে নেই, কিন্তু তার পরিবারের সন্তানেরা মানুষের মতো মানুষ হয়েছে।’

এসময় মেছেরের বড় ছেলে ডা. গোলাম মর্তুজা সৌরভ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘বাবার সাথে আমার স্মৃতি ভীষণ অল্প৷ মাত্র ছয় বছর পেয়েছিলাম তাঁকে৷ আমার চেয়ে এই কুতুবপুরের জনসাধারণই বাবার কথা বেশি বলতে পারবেন৷ তবে যতোটুকু জানি, বাবা কুতুবপুরের মানুষকে ভীষণ ভালোবাসতেন৷ সরকারি চাকুরির কারণে আমাকে অন্য জেলায় থাকতে হলেও মন পড়ে থাকে এখানে৷ আমার বাবাকে ভালোবেসে আপনারা যেভাবে এখানে এসেছেন, তাতে আমি কৃতজ্ঞ। আপনাদের যেকোনো প্রয়োজনে আমি পাশে থাকার কথা দিচ্ছি৷ ভবিষ্যতে বৃহৎ পরিসরে আপনাদের সেবা করার সুযোগ পেলে সাদরে গ্রহণ করবো।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক হাজী মো. ইউনুস দেওয়ান, মেছেরের বড়ভাই, জেলা শ্রমিক লীগের সহসভাপতি সিকদার মাহবুবুর রহমান হক, জেলা কৃষক লীগের দপ্তর সম্পাদক হুমায়ুন কবির, আওয়ামী লীগ নেতা ও মেছেরের বড়ভাই সিকদার মো. ওয়াজেদ, আওয়ামী লীগ নেতা মাহতাবউদ্দিন হাওলাদার, ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহসভাপতি সোহেল রানা, কুতুবপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মীর হোসেন মীরু, আওয়ামী লীগ নেতা ডা. রফিকুল ইসলাম, পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য রেজাউল করিম, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আতিকুল ইসলাম খোকন, শাহীন, ডা. সোহাগ, দ্বীন ইসলাম, জামালউদ্দিন বাচ্চু, যুবলীগ নেতা কনক, ইব্রাহিম, রতন, নূর ইসলাম, সানি, রায়হান, শরিফ, শুভ, হৃদয় প্রমুখ।

মেছের পরিবারের অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তার বড় ছেলে ডা. সিকদার গোলাম মর্তুজা সৌরভ, ভাতিজা ও গণমাধ্যমকর্মী সিকদার গোলাম জাকারিয়া শিপন, সিকদার সাজিদুর রহমান নেহাল, সিকদার আবিদুর রহমান নাভিদ প্রমুখ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *