জাকির হোসেন :
নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক আলী আহাম্মদ চুনকার মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর সমাধিতে পুস্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে নাসিক ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মিজানুর রহমান খাঁন রিপন। শনিবার সকালে সিদ্ধিরগঞ্জবাসীর পক্ষ থেকে মাসদাইর কবরস্থানে আলী আহাম্মদ চুনকার মাজারে ফুল দিয়ে এ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কাউন্সিলর মো, মিজানুর রহমান খাঁন রিপন। এর আগে সকাল ৭ টায় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শহরে আয়োজিত আলী আহাম্মদ চুনকা ফাউন্ডেশনের প্রভাত ফেরিতে অংশ গ্রহন করেন তিনি। শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক প্রদক্ষিন করে মাসদাইর কবরস্থানে আলী আহাম্মদ চুনকার মাজারে গিয়ে প্রভাত ফেরিটি শেষ হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নাসিক ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আমির হোসেন আলী, বাবুল বেপারী, আবুল ভান্ডারী বিল্লাল হোসেন কাজল, আলমগীর হোসেন, মাহবুবসহ আরো অনেকে। শ্রদ্ধা নিবেদন ও কবর জিয়ারতের সময় এই জননেতার আত্মার মাগফেরাত কামনায় নাসিক ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মিজানুর রহমান খাঁন রিপন সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৩৪ সালে ১৬ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের দেওভোগের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে আলী আহাম্মদ চুনকা জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ওয়াহেদ আলী, মাতার নাম গোলেনুর বেগম। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৭১’র স্বাধীনতা সংগ্রাম পর্যন্ত সকল আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন আলী আহাম্মদ চুনকা। তিনি ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হলে মনোবল ভেঙ্গে যাওয়া নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত এবং সংগঠিত করার কাজটিও করেন চুনকা। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর দীর্ঘদিন তাকে গৃহবন্দি রাখা হয়। স্থানীয় সেনা ক্যাম্প ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন।
১৯৭৮ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন আলী আহাম্মদ চুনকা। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর নারায়ণগঞ্জ প্রথম নির্বাচনে বিপুল ভোটে প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭৯ সালে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নে সংসদ সদস্য প্রার্থী হন। আলী আহাম্মদ চুনকা রাজনৈতিক পরিধির বাইরে গিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় সামাজিক ও ক্রীড়া সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তিনি সবার কাছে চুনকা ভাই হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এই পরিচিতি তাকে জননেতার মর্যাদায় আসীন করে। দীর্ঘ কর্মময় জীবনে কখনও ক্লান্তি স্পর্শ করেনি তাকে। বিরামহীন এই পথ চলা তাকে কিংবদন্তীতূল্য জনপ্রিয়তা এনে দেয়। তাঁর তিন কন্যার মধ্যে বড়জন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে টানা তৃতীয় মেয়াদে মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন। দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে আহাম্মদ আলী রেজা রিপন জেলা যুবলীগের সহসভাপতি এবং ছোট ছেলে আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জ্বল মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।