মনির হোসেন,ঢাকা,সেপ্টেম্বর ১৯।। ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ক্লাবের সহ-সভাপতি,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য এবং ফরিদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ড. যশোদা জীবন দেবনাথ সিআইপি বলেন, আমি বাংলাদেশের ফরিদপুরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আস্থার জায়গায় রয়েছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ফরিদপুরে প্রায় ১৮ শতাংশ সনাতন ধর্মাবলম্বী বসবাস করে। জামায়ত-বিএনপির সময় ফরিদপুরে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা কঠিন সময় পার করেছে। আমি দুর্দিনে পাশে থেকে সবরকম সহযোগিতা করে তাদের ভালোবাসা অর্জন করতে পেরেছি বলেই তারা তাদের আস্থার জায়গায় আমাকে স্থান দিয়েছে। এই বিষয়টি চিন্তা করে ফরিদপুরে নিট এন্ড ক্লিন ইমেজের মানুষ হিসেবে আমি ইতিমধ্যে বিবেচিত হয়েছি। ফলে আমাদের মানবতার নেত্রী বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আমাকে যোগ্য মনে করে যদি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেন তাহলে আমি শতভাগ সফল হব।

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে বাংলাদেশের কয়েকজন সিনিয়র গনমাধ্যম কর্মীদের সাথে একান্ত আলাপকালে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। দীর্ঘ আলাপচারিতায় তার রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক,সামাজিক ও ব্যবসায়িক কর্মকান্ডের বিভিন্ন সফলতার দিক উঠে আসে। ড. যশোদা জীবন দেবনাথ সিআইপি বলেন,বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। চলমান এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনা সরকারের কোনো বিকল্প নেই ।
তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে বাংলাদেশের যোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক উন্নয়ন হয়েছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক ও রেলযোগাযোগ স্থাপনের জন্য পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু, তিস্তা সেতু, পায়রা সেতু, দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু, দ্বিতীয় মেঘনা, দ্বিতীয় গোমতী সেতুসহ শত শত সেতু, সড়ক, মহাসড়ক নির্মাণ, পুননির্মান করেছে সরকার। ড. যশোদা জীবন দেবনাথ বলেন, এক পদ্মা সেতু বাংলাদেশের দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলাকে সড়ক পথে ঢাকা এবং অন্যান্য জেলার সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত করেছে। ঢাকা থেকে ফরিদপুর যেতে সময় লাগত ৪/৫ ঘণ্টা, এখন লাগে মাত্র ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। তাই আমি মনে করি,এই জায়গায় শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠার প্রয়োজন রয়েছে। এর ফলে অনেক ফরিদপুরবাসীর কর্মসংস্থান তৈরি হবে। যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।
ড. যশোদা জীবন দেবনাথ সিআইপি বাবা-মায়ের কোল আলো করে ২৭ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে ঢাকা বিভাগের ফরিদপুর জেলার ধোপাডাঙ্গা চাঁদপুরের অজপাড়াগাঁয়ে এক হতদরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দুই মেয়ের পরে প্রথম পুত্র সন্তান, তাই বাবা-মা তাকে আদর করে ‘জীবন’ বলে ডাকতেন। তার বাবার নাম প্রয়াত গোপাল চন্দ্র, তার মায়ের নাম শোভা রানী দেবনাথ, তার স্ত্রীর নাম সোমা দেবনাথ। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক।
বাবা-মা ও তার পাঁচ ভাই-বোনের সংসার, যেখানে অভাব ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। অভাবের সংসার, তাই অন্যের দোকানে কর্মচারী, লজিং মাস্টার থেকে এবং টিউশনির পাশাপাশি নিজের পড়াশোনা এইচএসসি এবং গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেছেন ফরিদপুর রাজেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তার লেখাপড়ার সমাপ্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, ইউএসএ থেকে ব্যাংকিং এবং ফাইন্যান্স-এর উপরে ডক্টরেট ডিগ্রি এবং এন্ডাসগেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউরোপিয়ান প্রফেশনাল ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করার মাধ্যমে। ৬ বছর বাংলাদেশের স্বনামধন্য দুটি আইটি কোম্পানিতে চাকরি করার পর তিনি নিজেই ২০০১ সালে আইটি ব্যবসা শুরু করেন টেকনোমিডিয়া লিমিটেড নামে আমেরিকা বেজড্ একটি এটিএম কোম্পানি এনসিয়ার করপোরেশনের সঙ্গে।
ড. যশোদা জীবন দেবনাথ জীবনে অনেক বই লিখেছেন। এই লেখালেখির কাজ তিনি প্রতিনিয়তই অব্যাহত রেখেছেন। তার বইয়ের তালিকায় রয়েছে-মহানায়কের ইতিকথা,জননেত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন, উন্নয়ন, জীবন থেকে নেওয়া,পূর্ব পাকিস্তানের ভারতে গোপন নৌযুদ্ধের অপ্রকাশিত গল্প ১৯৭১ অপারেশন, জীবনপ্রদীপ জে¦লে, ফরিদপুরের মুক্তিযুদ্ধ ও একটি তর্জনীর আত্মকথা। রাজনৈতিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে তিনি বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফরিদপুর জেলা কমিটির কোষাধ্যক্ষ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য।
ড. যশোদা জীবন দেবনাথ কর্মদক্ষতা ও অর্থনীতিতে অবদান রাখায় বাংলাদেশ সরকার থেকে অনেক স্বীকৃতি লাভ করেন। যেমন-২০২২ সালে বঙ্গবন্ধু শিল্প পুরস্কারে ভূষিত হন, শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে ২০১৪, ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭ এবং ২০২১ সালে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) পুরস্কার লাভ করেন, ২০২১ সালে জাতীয় উৎপাদনশীলতা এবং গুণমানের শ্রেষ্ঠত্ব পুরস্কারের জন্য ভূষিত হয়েছেন, ২০১৪ সালে এনসিআর করপোরেশন থেকে ডিস্টিংশনের জন্য পার্টনার অ্যাওয়ার্ডের জন্য ভূষিত হন, ২০১১ সালে এনসিআর করপোরেশন থেকে সার্কেল অব ডিস্টিংশনের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন, ২০১০ সালে এনসিআর করপোরেশন থেকে মধ্যপ্রাচ্য আফ্রিকা (এমইএ) অঞ্চলে এনসিআই এটিএম-এর জন্য ২য় বৃহত্তম পরিবেশক হিসাবে পুরস্কৃত হয়।
ড. যশোদা জীবন দেবনাথ সামাজিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রেখে চলেছেন। তিনি ২০২২ সাল থেকে বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য। ২০২০ সাল থেকে ফরিদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৬ সাল থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিযুক্ত ধোপাডাঙ্গা এমএল উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়াও তিনি ২০১৬ সালে দেবনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের জমি দান করেন। ২০১৩ সাল থেকে তিনি সুদর্শন ইন্টারন্যাশনাল কিন্ডারগার্র্টেন স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। সেই সঙ্গে তিনি ভারত বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ক্লাবের সহ-সভাপতি, ধানমন্ডি ক্লাব লিমিটেডের পরিচালক, বনানী ক্লাব লিমিটেডের সদস্য, সদস্য অল কমিউনিটি ক্লাব লিমিটেড, সদস্য ফরিদপুর ডায়াবেটিক সমিতি, সদস্য ফরিদপুর ফাউন্ডেশন, সদস্য ফরিদপুর শিশু হাসপাতাল, সদস্য ফরিদপুর হার্ট ফাউন্ডেশনসহ নানা সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত থেকে মানুষের কল্যানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।