নিজস্ব প্রতিবেদক ।।বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় কমিশন গঠন এবং তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আইন প্রণয়নের দাবিতে আয়োজিত বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ভারত-বাংলাদেশের ইতিহাস একই সূত্রে গাঁথা। আলাদা দুটি ভূখণ্ড সত্ত্বেও দুই দশের জনগণের সংস্কৃতি ও পরম্পরাও অভিন্ন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার রজতজয়ন্তীর সাথে ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বেরও রজতজয়ন্তী পূর্ণ হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব।
শনিবার রাতে ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করে প্রধান অতিথীর বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট বিধান বিহারী গোস্বামীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরো বক্তব্য দেন, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ প্রামাণিক,কলকাতার দৈনিক আজকাল পত্রিকার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক তরুণ চক্রবর্তী।
সম্মেলনে জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ প্রামাণিক বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৭.৯ শতাংশে নেমেছে। বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হলেও প্রতিবাদ হয়েছে নামমাত্র। জাতীয় সংসদে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধত্বকারী সদস্যের সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়। এ জন্য সংখ্যানুপাতিক তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য সংসদীয় আসন নির্ধারণ করতে হবে। সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে গোবিন্দ প্রামাণিক বলেন, ‘দেশের সাধারণ মানুষ সাম্প্রদায়িক নয়, কিন্তু একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠীর ভাবাদর্শ সাম্প্রদায়িক। কমিশন গঠন করে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী কর্তৃক নির্যাতনের ঘটনাগুলোর বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঘিরে সাম্প্রদায়িক হামলা ঠেকাতে প্রয়োজন কার্যকর আইন।
এছাড়া সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু এ দেশে অসাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করেছিলেন। হিন্দু-মুসলিম-নির্বিশেষে সবাই বাঙালি হয়ে যুদ্ধ করেছিল, জয় বাংলা বলে আত্মাহুতি দিয়েছিল। কিন্তু একাত্তরের পরাজিত শক্তি বিভিন্ন সময় সাম্প্রদায়িকাতে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করেছে। সংবিধানে এখনো সাম্প্রদায়িকতার ছাপ রয়েছে, সামরিক শাসনের ছাপ রয়েছে। তাই অসাম্প্রদায়িক দেশ গঠনে বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যাওয়ার বিকল্প নেই। সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সাম্প্রদায়িক আস্ফালনের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন ধর্মীয় সংখ্যালঘু কমিশন। সাম্প্রদায়িক আগ্রাসনের সকল ঘটনার দ্রুত বিচার সম্পন্ন করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।