মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ওপর হামলার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠছে সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকা, আইন-শৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কা

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি

সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল চৌধুরীবাড়ি বৌ-বাজার এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের একটি জমি দখলকে কেন্দ্র করে কিছুদিন পর পর দফায় দফায় হামলা, মামলা ও অভিযোগের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পুরো এলাকা। মামলায় নীরিহ ও ন্যায়ের পক্ষদের আসামি করা হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এতে পুরো এলাকা কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে দিনাতিপাত করছে স্থানীয়রা। গত শনিবার আইন-শৃংখলা বাহিনীর উপস্থিতিতে জমি দখলের উদ্দেশ্যে হামলার ঘটনায় বৌ-বাজার ও আশেপাশের এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। সাধারণ জনগণ ভীত সম্ভ্রস্ত।

সোমবার (১৮ জুলাই) বিরোধপূর্ণ ওই জমির মালিক দাবি করা সাহাবুদ্দিন মিয়া ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে একটি চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন। মামলায় গোদনাইল এলাকার স্বপন, কাজী ওয়াহিদ, মো. মাহবুব, রিপন, মো. রুবেল, বাবু, শামীম আহমেদ, মনির, মজিবুর, ওয়াসিম, মুরাদ ভুইয়া, বিদ্যুৎ, আয়নাল, সজিব ও মঞ্জু মেকারকে আসামি করা হয়।

তবে মামলার অভিযুক্তদের দাবি ন্যায়ের পক্ষে কথা বলা, জমি দখলের চেষ্টায় হামলা ও ভাংচুরে বাধা দেয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এ মিথ্যা মামলা সাজিয়েছে সাহাবুদ্দিন মিয়া। এ ঘটনায় স্থানীয় যুব সমাজ ও মুরব্বিদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে এবং উত্তেজনা বিরাজ করছে।

মামলায় অভিযুক্ত ভুক্তভোগী কাজি ওয়াহিদ, রিপন ও মাহমুদ জানান, বৌ-বাজার এলাকায় একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জমি অন্যায়ভাবে দখল করে নেয়ার চেষ্টায় ওই জমিতে থাকা বসত-বাড়িতে হামলা ভাংচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। এই অন্যায় কাজের বাধা দেই আমরা। এর জের ধরেই সাহাবুদ্দিন আমাদের নামে আদালতে চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। যাতে করে আমরা মামলার গ্রেপ্তার এড়ানোর ভয়ে এলাকা ছাড়া হই। এ সুযোগে শাহাবুদ্দিন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীরা তাদের অন্যায় কাজ বিনা বাধায় সফল করে নিতে পারে। কিন্তু আমরা তা হতে দেব না। এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করে ভুমিদস্যুতার মত কোন অন্যায় কাজ আমরা হতে দেব না। সে যেই হোক, আমরা এর প্রতিবাদ করবো। কোনো অন্যায়কে প্রতিষ্ঠা করতে দেব না।

স্থানীয়রা জানান, গত শনিবার ৪০/৫০ জনের মত লোকজন এসে ভুক্তভোগীদের বসত-ঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এসময় র‌্যাব ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও হামলাকারীরা তাদেরকে তোয়াক্কা না করে তান্ডব চালিয়ে যায়। আইনশৃংখলা বাহিনীও নীরব ভুমিকা পালন করে। এতে করে তারা আতঙ্ক নিয়ে বসবাস করছে। তাদের মতে জমির মালিকানা নিয়ে দ্রুত সমাধান না হলে বড় ধরণের নাশকতা এমনকি প্রানহানীও ঘটতে পারে।

জানা যায়, জমির মালিকানা দাবি করা শাহাবু্িদ্দন ওই এলাকার প্রভাবশালী রব এর কাছ থেকে এ জমি ক্রয় করেন। এরপর থেকেই প্রভাবশালীদের প্রভাব দেখিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা ওই জমি দখল করতে মরিয়া হয়ে পড়ে শাহাবুদ্দিন। এরপর থেকে একের পর এক বিভিন্ন কৌশল ও দফায় দফায় হামলা চালিয়ে ওই জমিতে ভোগদখলকারীদের উচ্ছেদ করার ব্যর্থ চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের এমন কর্মকান্ডে আশেপারেশর সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত ও ভীত। এলাকার শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখা ও নির্বিঘ্নে বসবাস করতে এলাকাবাসী আইনশৃংখলাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

ভুক্তভোগীরা জানান, আমাদের বৈধ জায়গায় এসে আমাদেরই ঘরবাড়ি ভেঙে দিলো। এখন আবার শুনছি আমাদের নামেই নাকি মিথ্যা মামলা সাজানো হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের প্রশাসনের সব দপ্তরের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি আমাদের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করুন। আমরা আমাদের পৈতৃক সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে নানাভাবে ভূমিদস্যুতার শিকার হচ্ছি।

এ বিষয়ে জমির মালিক দাবি করা শাহাবুদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইলে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। ##

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *