নিজস্ব প্রতিবেদক।। নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জে অসহায় দুই নারী ও তাদের সন্তানদের বাড়ী থেকে উচ্ছেদ করার পায়তারা চালাচ্ছে বলে এক গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে,নাসিক ১ নং ওয়ার্ড আওতাধীন পাইনাদি নতুন মহল্লায় অবস্থিত জেসমিন আক্তার ও তার ঝা আয়েশা বিবি নিজ নিজ স্বামী কর্তৃক নির্মিত বাড়ীতে পরিবার-পরিজন নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করে আসছে।তাদের ভাসুর নুর ইসলামের আপন শ্বশুর মাহবুব এনামুল হক উক্ত বাড়িটি দেখা শোনার দায়িত্ব নিয়ে এখন নিজেই তা দখল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। জেসমিন ও আয়েশা বিবির স্বামীদ্বয় দীর্ঘদিন যাবত বিদেশে অবস্থান করায় তারা ন্যায় বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এ ব্যাপারে আইনগত প্রতিকার পাওয়ার জন্য সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ও নাসিক ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। মাহবুব এনামুল হক নিজেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিয়ে তাদেরকে বাড়ী ছাড়া করার জন্য নানা ভয়ভীতি ও খুন জখম করার হুমকি দিচ্ছে বলে ভুক্তভোগী দুই নারী তাদের অভিযোগে উল্লেখ করেছেন। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন সহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অসহায় দুই নারী ও তাদের পরিবার পরিজন।
এদিকে,২০০৫ সালে সিদ্ধিরগঞ্জ নাসিক ১ নং ওয়ার্ডের পাইনাদি নতুন মহল্লা এলাকায় জমি ক্রয় করে নূর নবী, নুরুল ইসলাম ও নূর আলম তিন ভাই । এদের মধ্যে নূর নবী ও নূর আলম বড় ভাই নুরুল ইসলাম এর শ্বশুর মাহবুব এনামুল হককে দায়িত্ব দেন বাড়ীর নির্মান কাজের জন্য। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে বাড়ীর নির্মান কাজ শুরু করেন এনামুল । তারপর বাড়ী নির্মান করার পর থেকে অদ্য পর্যন্ত তিনি বাড়ী ভাড়া ও অন্যান্য সুবিধা ভোগ করে আসছেন। অংশীদারী হিসেবে ছোট দুই ভাইকে বাড়ী বুঝিয়ে না দিয়ে বড় ভাই নুরুল ইসলাম এর শ্বশুর মাহবুব এনামুল হক জমিটি দখল করে খাচ্ছেন বলে অভিযোগ ছোট দুই ভাইয়ের পরিবারের।
এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক জানায়, আমার এক প্রতিপক্ষের পক্ষ নিয়ে কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলাম এর লোকজন আমার বাড়ী দখল ও ভাড়াটিয়াদেরকে বাড়ী ভাড়া তাদের দিতে বলেন। এ বিষয়ে আমি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে নুরুল ইসলামের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী আয়েশা আক্তার জানায়, মাহবুব এনামুল আমার ভাসুরের শ্বশুর। আমার স্বামী ও তার ভাই যৌথভাবে জমি ক্রয় করে বাড়ী নির্মাণ করেছে । আমার স্বামী ও তার ছোট ভাই দেশের বাইরে থাকার কারণে বাড়ী তৈরির সময় টাকার প্রয়োজন হলে এনামুল সাহেবকে পাওয়ার এর মাধ্যমে দায়িত্ব দেয়া হয় ব্যাংক থেকে লোন উত্তোলন করার জন্য। ব্যাংকের এই লোনের টাকা পরিশোধের জন্য আমার স্বামী ও তার ছোট ভাই প্রতি মাসে মাহবুব এর একাউন্টে ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পাঠাতেন এবং আমি আর আমার মেজ ভাবি প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা দিতাম। তিনি আমাদের টাকাগুলো ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজের কাজে ব্যবহার করেছেন। এ বিষয়ে গত নভেম্বর মাসে আমরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি এবং আমাদের মামলা কোর্টে চলমান আছে। দীর্ঘ ১৪ বছর যাবত তিনি আমাদের জায়গা দখল করে টাকা আত্মসাৎ করে যাচ্ছেন। তিনি এই জায়গার কোন মালিক নন। এটা আমার স্বামীসহ তাদের তিন ভাইয়ের নামে ক্রয়কৃত সম্পত্তি ।
এ বিষয়ে ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এর ব্যক্তিগত সহকারি মাসুদ বলেন, আমরা অন্যের বাড়ী কেন দখল করতে যাব। এনামুল হক তার মেয়ের জামাই ও ভাইয়ের সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করায় তাদের ছোট ভাইয়ের পরিবার কাউন্সিলর অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা কাউন্সিলর অফিস থেকে উক্ত বাড়ীতে গিয়ে ভাড়াটিয়াদেরকে ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যাংকের লোকদের কাছে টাকা দিতে বলেছিমাত্র। অথচ আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন গনমাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মশিউর রহমান জানান,আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।